আজ বিশ্ব ডায়াবেটিস দিবস
প্রকাশিত : ০০:০৫, ১৪ নভেম্বর ২০১৮ | আপডেট: ১৮:৪৪, ১৪ নভেম্বর ২০১৮
আজ বুধবার বিশ্ব ডায়াবেটিস দিবস। দিবসটির এবারের প্রতিপাদ্য ‘ডায়াবেটিস প্রতিটি পরিবারের উদ্বেগ’। দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন।
বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মতো বাংলাদেশের জনগণের মধ্যে ডায়াবেটিস সম্পর্কে সচেতনতা বাড়াতে এবার বাংলাদেশ ডায়াবেটিক সমিতিসহ (বাডাস) বিভিন্ন সংগঠন নানা কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।
চলতি বছরের বিশ্ব ডায়াবেটিস দিবসের ক্যাম্পেইনে ডায়াবেটিস ব্যবস্থাপনা, যত্ন, প্রতিরোধ এবং এ সংক্রান্ত শিক্ষা বিষয়ে পরিবারের ভূমিকার ওপর গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে। প্রতিদিন ডায়াবেটিস রোগীর জন্য ইনসুলিন কেনা ও রোগ মনিটর করা একটি পরিবারের জন্য বেশ ব্যয়বহুল বিষয়। তাই পরিবারের অন্য সদস্যদের ডায়াবেটিস প্রতিরোধে জ্ঞানার্জন জরুরী বিষয় বলে বিবেচিত হচ্ছে।
স্মরণ করা যেতে পারে, ডায়াবেটিস বিষয়ে সচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে বিশ্ব ডায়াবেটিস দিবস (১৪ নবেম্বর) বহাল থাকতেও বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবসের প্রতিপাদ্য হিসেবে দু’বছর আগে বেছে নেয়া হয়েছিল ডায়াবেটিসকেই। এ থেকে সহজেই বুঝে ওঠা যায় যে বিশ্বব্যাপী ডায়াবেটিস রোগকে কতটা গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা কর্তৃক বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবসের ফোকাস হিসেবে ডায়াবেটিসকে বেছে নেয়ার পেছনে কাজ করেছিল তিনটি বিষয়।
এক. নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশগুলোতে ডায়াবেটিস রোগের প্রকোপ বৃদ্ধি এবং মানবজীবনে রোগটির বড় বোঝা হয়ে ওঠা ও তার পরিণতি সম্পর্কে সচেতনতা সৃষ্টি করা।
দুই, ডায়াবেটিসকে মোকাবেলার জন্য সুনির্দিষ্ট, কার্যকর ও সাশ্রয়ী উপায় নির্ধারণ করা। যা ডায়াবেটিস প্রতিরোধ, রোগনির্ণয়, চিকিৎসা ও যত্নে কাজে আসবে।
তিন, ডায়াবেটিসের ওপরে প্রথম গ্লোবাল রিপোর্ট উপস্থাপন যা মানবজীবনে রোগটির বড় বোঝা হয়ে ওঠা ও তার পরিণতি সম্পর্কে জানাবে। স্বাস্থ্যরীতি উন্নয়নে নজরদারি নিশ্চিত করবে, রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থার উন্নয়ন ঘটাবে এবং ডায়াবেটিসের কার্যকর ব্যবস্থাপনা গড়ে তুলবে।
আইডিএফ-এর সর্বশেষ সমীক্ষা থেকে জানা যায়, বিশ্বে ডায়াবেটিস আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বর্তমানে ৪২৫ মিলিয়ন, অর্থাৎ ৪২ কোটিরও বেশি। তবে শঙ্কার বিষয় হলো প্রতি দু’জন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের মধ্যে একজন এখনও জানতে পারছেন না যে তার ডায়াবেটিস রয়েছে। রোগ শনাক্ত করা গুরুত্বপূর্ণ। অশনাক্ত থাকলে ঝুঁকি বহুগুণ বেড়ে যায়। বিশ্ব ডায়াবেটিস দিবস হলো বিশ্বজুড়ে ডায়াবেটিস সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে একটি ক্যাম্পেইন, যা প্রতিবছর ১৪ নভেম্বর অনুষ্ঠিত হয়।
বিশ্বজুড়ে ডায়াবেটিস রোগ ব্যাপক হারে বেড়ে যাওয়ায়, বিশ্ব ডায়াবেটিস ফেডারেশন (আইডিএফ) ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ১৯৯১ সাল-এ ১৪ নভেম্বরকে ডায়াবেটিস দিবস হিসেবে ঘোষণা করে। এদিন বিজ্ঞানী ফ্রেডরিক বেনটিং জন্ম নিয়েছিলেন এবং তিনি বিজ্ঞানী চার্লস বেস্টের সঙ্গে একত্রে ইনসুলিন আবিষ্কার করেছিলেন। ২০০৭ সালে সিদ্ধান্ত হয়, ডায়াবেটিস প্রতিরোধ অভিযান পরিচালনার থিমটি আরও দীর্ঘ সময় ধরে থাকবে। বিশ্ব ডায়াবেটিস দিবস ২০০৭-০৮ এর থিম নির্ধারিত ছিল ‘শিশু ও তরুণদের মধ্যে ডায়াবেটিস’। ২০০৯ থেকে ২০১৩ সালের থিম নির্ধারিত হয়েছিল, ‘ডায়াবেটিস শিক্ষা ও প্রতিরোধ’। ২০০৭-০৮ সালে এই অভিযানের মূল লক্ষ্য ছিল আরও বেশি শিশু ও তরুণকে এই পরিচর্যার আওতায় আনা। ডায়াবেটিসের জরুরী সংকেত সম্পর্কে সচেতনতা সৃষ্টি করা। আর শিশুদের মধ্যে টাইপ-২ ডায়াবেটিস প্রতিরোধের জন্য স্বাস্থ্যকর জীবন যাপনকে আরও জনপ্রিয় করে তোলা।
বাংলাদেশে ডায়াবেটিস রোগী রয়েছে প্রায় ৯০ লাখ, বছরে বাড়ছে আরও ১ লাখ রোগী। ডায়াবেটিস প্রতিরোধে এখনই কার্যকর উদ্যোগ না নিলে বিশ্বে ডায়াবেটিস রোগীর সংখ্যা আগামী ২০৩০ সালের মধ্যে ৫৫ কোটি ছাড়িয়ে যাবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন বিশেষজ্ঞরা। তাঁরা বলছেন, সুশৃঙ্খল জীবনযাপন করলে রোগী নিজেই ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। সব বয়সের মানুষই আজ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হচ্ছে। প্রতিবছরই দ্বিগুণহারে বাড়ছে নতুন নতুন ডায়াবেটিস রোগীর সংখ্যা। সচেতনতার অভাবে অনেকেই এ রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। বর্তমানে সারাবিশ্বে ডায়াবেটিস রোগীর সংখ্যা বিবেচনায় বাংলাদেশের অবস্থান ১০ম স্থানে।
এসি